Skip to content

শিশুর আমাশয়ের লক্ষন,প্রতিকার ও প্রতিরোধ

শিশুর আমাশয়ের লক্ষন,প্রতিকার ও প্রতিরোধ

শিশুদের আমাশয় একটি সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি অন্ত্রের ইনফেকশন বা সংক্রমণের কারণে ঘটে এবং প্রাথমিকভাবে শিশুর শারীরিক কষ্ট বাড়ায়। তবে সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিলে এটি সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই নিবন্ধে আমরা শিশুর আমাশয়ের লক্ষণ, প্রতিকার এবং প্রতিরোধের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।


আমাশয় কী?

আমাশয় হলো অন্ত্রের একটি জীবাণুঘটিত সংক্রমণ। এটি সাধারণত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা পরজীবী দ্বারা ঘটে থাকে। শিশুদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়, কারণ তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে দুর্বল।


শিশুর আমাশয়ের লক্ষণ

আমাশয়ের লক্ষণ সাধারণত দ্রুত প্রকাশ পায়। নিচে কিছু সাধারণ লক্ষণ তুলে ধরা হলো:

শিশুর আমাশয়ের লক্ষন,প্রতিকার ও প্রতিরোধ
  1. ডায়ারিয়া: বারবার পাতলা পায়খানা হওয়া।
  2. পেটে ব্যথা: বিশেষ করে নাভির চারপাশে প্রচণ্ড ব্যথা।
  3. জ্বর: অনেক সময় সংক্রমণ গুরুতর হলে জ্বর হতে পারে।
  4. মলের সঙ্গে রক্ত: মলের সঙ্গে রক্ত বা মিউকাস দেখা যায়।
  5. বমি বা বমি বমি ভাব
  6. পানিশূন্যতা: শরীরে পানির অভাবজনিত দুর্বলতা।

শিশুর আমাশয়ের কারণ

আমাশয় হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো:

  1. দূষিত খাবার: অপরিষ্কার বা সংক্রমিত খাবার থেকে।
  2. দূষিত পানি: বিশুদ্ধ পানির অভাবে।
  3. নোংরা হাত: হাত ধোয়ার অভ্যাস না থাকলে।
  4. পুকুর বা পুলের পানি: সাঁতারের সময় দূষিত পানি পেটে গেলে।
  5. সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শ

শিশুর আমাশয়ের প্রতিকার

আমাশয় হলে শিশুর স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে। নিচে করণীয় বিষয়গুলো দেওয়া হলো:

১. পর্যাপ্ত তরল গ্রহণ

আমাশয়ের কারণে শরীরে পানিশূন্যতা হতে পারে। শিশুকে পর্যাপ্ত তরল খাবার যেমন:

  • খাওয়ার স্যালাইন।
  • ডাবের পানি।
  • ফলের রস।
  • চিনির শরবত।

২. পর্যাপ্ত বিশ্রাম

শিশুর শরীরকে সুস্থ করতে পর্যাপ্ত বিশ্রামের প্রয়োজন।

৩. চিকিৎসকের পরামর্শ

যদি:

  • মলে রক্ত দেখা যায়।
  • বারবার পাতলা পায়খানা হয়।
  • জ্বর দীর্ঘস্থায়ী হয়।

তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৪. ওষুধ ও এন্টিবায়োটিক

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করান। কোনো ওষুধ নিজের ইচ্ছেমতো খাওয়ানো যাবে না।


শিশুর আমাশয় প্রতিরোধ

আমাশয় প্রতিরোধে নিচের বিষয়গুলো মেনে চলা উচিত:

১. বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার

  • শিশুকে সবসময় বিশুদ্ধ পানি পান করান।
  • দাঁত ব্রাশ করার সময় বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করুন।

২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা

  • মলত্যাগের পর এবং খাবার গ্রহণের আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করান।
  • খেলনা এবং ব্যবহৃত জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখুন।

৩. বাইরের খাবার এড়িয়ে চলা

  • রাস্তার খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
  • ফল এবং সবজি ভালোভাবে ধুয়ে নিন।

৪. সাঁতার কাটার সময় সতর্কতা

  • শিশুকে দূষিত পুকুর বা পুলে সাঁতার কাটতে দেবেন না।

৫. রোগীর সংস্পর্শ এড়ানো

  • আমাশয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।

প্রশ্নোত্তর

১. শিশুর আমাশয় কত দিন স্থায়ী হয়?

সাধারণত তীব্র আমাশয় ৭-১০ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে দীর্ঘস্থায়ী আমাশয়ের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।

২. আমাশয়ের জন্য স্যালাইন কতটা জরুরি?

খাওয়ার স্যালাইন পানিশূন্যতা প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৩. শিশুর মলে রক্ত দেখলে কী করবেন?

যদি মলে রক্ত দেখা যায়, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৪. কোন বয়সে শিশুরা আমাশয়ে বেশি আক্রান্ত হয়?

সাধারণত ৬ মাস থেকে ৫ বছরের শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে।

৫. কি খাবার শিশুকে খাওয়ানো উচিত?

পাতলা ভাত, খিচুড়ি, ডাল, ফলের রস এবং স্যুপ খাওয়ানো যেতে পারে।


শেষ কথা

শিশুর আমাশয় একটি প্রতিরোধযোগ্য সমস্যা। সচেতনতা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে সহজেই এটি এড়ানো সম্ভব। যদি শিশুর আমাশয়ের লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দ্রুত পদক্ষেপ নিন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শিশুদের সুস্থ রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই।

Updated on: Tuesday, January 21, 2025

Explore Healtha Popular Topics

Discover comprehensive healthcare resources and tools