আদা শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, এটি বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমাদের প্রাচীন চিকিৎসাব্যবস্থায় আদা একটি অপরিহার্য উপাদান। আদার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই এবং সি।
Table of Contents
আদার পুষ্টিগুণ
আদায় রয়েছে
- অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট – জীবাণু ধ্বংসে সহায়ক।
- অ্যান্টি–ইনফ্লামেটরি এজেন্ট – প্রদাহ কমায়।
- অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট – শরীরের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।
পেটের সমস্যায় আদার ভূমিকা
আমাশয়, পেটফাঁপা ও পেটব্যথা:
- খাওয়ার পর এক কাপ গরম পানিতে এক চা–চামচ আদার রস মিশিয়ে খেলে পেটের সমস্যাগুলো দূর হয়।
- দীর্ঘদিন সমস্যা থাকলে এক চা–চামচ আদার রস, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে দিনে দুবার পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসের সংক্রমণ
- হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট হলে প্রতিদিন আদার রস, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
- ঠান্ডাজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
গ্যাস্ট্রিক ও কোষ্ঠকাঠিন্য
- প্রথম সাত দিন এক চা–চামচ আদার রস ছয় থেকে সাতবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
- গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় প্রতিদিন দুবার আদার রস, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করলে স্থায়ী সমাধান হয়।
জয়েন্টের ব্যথা
- অস্টিওআর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং হাড়ের ব্যথায় আদা উপকারী।
- প্রতিদিন আদার রস, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করলে ব্যথা কমে।
হৃদরোগের জন্য আদা
- হৃদরোগীদের জন্য প্রতিদিন আদার রস, লেবুর রস ও মধু পান করা অত্যন্ত কার্যকর।
- গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থাকলে ছয় থেকে সাতবার আদার রস খেলে উপকার পাওয়া যায়।
জ্বর ও বমি ভাব
- জ্বর জ্বর ভাব এবং বমি ভাব হলে এক চা–চামচ আদার রস গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে আরাম পাওয়া যায়।
মাইগ্রেন ও সাইনাস
- মাইগ্রেন বা সাইনাসে আদার রস, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করলে সমস্যা কমে।
হজমে সহায়ক
- সামান্য লবণ দিয়ে কাঁচা আদা চিবিয়ে খেলে হজমে সহায়তা করে।
কাশি ও কফ
- প্রতিদিন আদার রস, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করলে কাশি কমে এবং কফ দূর হয়।

লিভার ও পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক
- আদার গুঁড়া, মধু ও আমলকীর গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে লিভার ও পাকস্থলীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
- প্রতিদিন আদার রস পান করলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
সাধারণ পরামর্শ
- আদা একবারে পিষে ফ্রিজে রেখে দেয়া উচিত নয়।
- খাবার আগে বা রান্নার সময়ই আদা ছেঁচে বা পিষে খাওয়া উচিত।
পাঠকের প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১: প্রতিদিন আদা খাওয়া কি নিরাপদ?
উত্তর: হ্যাঁ, তবে অতিরিক্ত খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
প্রশ্ন ২: শিশুরা কি আদা খেতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ, তবে পরিমাণ কম হতে হবে। মধু মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।
প্রশ্ন ৩: গর্ভবতী নারীদের জন্য আদা কতটা নিরাপদ?
উত্তর: গর্ভবতী নারীরা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আদা খেতে পারেন।
প্রশ্ন ৪: কাঁচা আদা খাওয়া কি উপকারী?
উত্তর: হ্যাঁ, এটি হজমে সহায়তা করে।
প্রশ্ন ৫: আদার রস সংরক্ষণ করা যায় কি?
উত্তর: না, এটি তাজা অবস্থায় খাওয়া সবচেয়ে ভালো।
শেষ কথা
আদার গুণাগুণ অসীম। প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে এটি শরীরের নানা সমস্যার সমাধানে কার্যকর। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আদা যোগ করলে শরীর ও মন দুটোই সুস্থ থাকবে।