Skip to content

শসার স্বাস্থ্যগুণ

শসা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সহজলভ্য একটি সবজি, যা শুধুমাত্র স্বাদ বাড়ায় না বরং আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর। এটি গরমকালের অন্যতম প্রিয় খাবার, যা শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক শসার স্বাস্থ্যগুণ সম্পর্কে।


শসার পুষ্টি উপাদান

শসা কম ক্যালরিযুক্ত এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ।

প্রতি ১০০ গ্রাম শসার পুষ্টি উপাদান:

  • ক্যালরি: ১৫.৫ গ্রাম
  • প্রোটিন: ০.৬৪ গ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট: ৩.৭৮ গ্রাম
  • ফ্যাট: ০.১১ গ্রাম
  • ডায়েটারি ফাইবার: ০.৬২ গ্রাম
  • মনোস্যাকারাইডস: ১.৭০ গ্রাম

এছাড়াও, শসায় রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, এবং প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

শসার স্বাস্থ্যগুণ

শসার প্রধান উপকারিতা

১. ওজন কমাতে সহায়ক

শসায় খুব কম ক্যালরি থাকায় এটি ওজন কমানোর জন্য আদর্শ। এতে প্রচুর পানি থাকে, যা শরীরকে আর্দ্র রাখে এবং পেট ভরা অনুভূতি দেয়। এটি অতিরিক্ত খাওয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

২. শরীর আর্দ্র রাখে

শসার ৯৬ শতাংশই পানি। এটি শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে এবং গরমকালে শরীর ঠান্ডা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

৩. ডিটক্সিফিকেশন

শসা ও পুদিনা দিয়ে তৈরি ডিটক্স ওয়াটার শরীর থেকে টক্সিন দূর করে। এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়ক।

৪. ত্বকের যত্নে কার্যকর

শসায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। এটি মুখের বলিরেখা কমাতে এবং স্কিন ইনফেকশন নিরাময়ে সহায়তা করে।

৫. চুলের গ্রোথ বাড়ায়

শসার মধ্যে থাকা খনিজ সিলিকা চুল এবং নখের গুণগত মান উন্নত করে। এটি চুল পড়া রোধ করে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

৬. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ

শসায় পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম থাকার কারণে এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এটি একটি স্বাস্থ্যকর খাবার।

৭. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ

শসার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে না এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শসা একটি আদর্শ খাবার।

৮. হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে

শসায় থাকা ভিটামিন কে হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া উন্নত করে।


শসার সঠিক ব্যবহারের উপায়

  • কাঁচা শসা: স্যালাড বা সরাসরি কাঁচা খাওয়া উত্তম।
  • শসার জুস: শরীর ডিটক্স করতে শসার জুস খুবই কার্যকর।
  • ডিটক্স ওয়াটার: পুদিনা এবং লেবু দিয়ে তৈরি শসার ডিটক্স ওয়াটার পান করুন।
  • ত্বকের যত্নে: শসা গোল করে কেটে চোখের ওপর রাখলে চোখের ফোলাভাব কমে যায়।

সতর্কতা

  • শসা লবণ দিয়ে খাওয়া এড়িয়ে চলুন। লবণ শসার স্বাস্থ্য উপকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।
  • যাদের কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা আছে, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত শসা খাবেন না।

সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)

প্রশ্ন ১: প্রতিদিন কতটা শসা খাওয়া উচিত?

উত্তর: একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন ২০০-৩০০ গ্রাম শসা খেতে পারেন।

প্রশ্ন ২: ডায়াবেটিস রোগীরা শসা খেতে পারবেন কি?

উত্তর: হ্যাঁ, শসা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ভালো।

প্রশ্ন ৩: শসা কি রাতের খাবারে খাওয়া ঠিক?

উত্তর: হ্যাঁ, রাতের খাবারে শসা খাওয়া ঠিক আছে। তবে অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো।

প্রশ্ন ৪: শসা কি কিডনির জন্য ভালো?

উত্তর: হ্যাঁ, শসার পানি কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে। তবে কিডনির জটিলতায় চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।

প্রশ্ন ৫: শসা কি শিশুদের খাওয়ানো যায়?

উত্তর: হ্যাঁ, শিশুদের শসা খাওয়ানো যায়। তবে তা ভালোভাবে ধুয়ে ছোট ছোট টুকরো করে দিন।


শেষ কথা

শসা আমাদের খাদ্যতালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এটি শুধু শরীর ঠান্ডা রাখে না, বরং নানা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় শসা অন্তর্ভুক্ত করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

Updated on: Monday, December 23, 2024

Explore Healtha Popular Topics

Discover comprehensive healthcare resources and tools